Prottashitoalo

চট্টগ্রাম টেস্ট : জয়ের অপেক্ষা টাইগারদের

0 30

দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে সফরকারী ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এখন শুধু জয়ের অপেক্ষা বাংলাদেশের। গতকাল চট্টগ্রামে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১১০ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়েছে উইন্ডিজ। আজ শেষ দিনে পাহাড়সম ২৮৫ রান তুলতে হবে জয়ের জন্য। আর আজ টাইগারদের দরকার ৭ উইকেট।

এর আগে রেকর্ড রান তাড়ায় নামা উইন্ডিজকে জুতসই শুরু এনে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার। তবে মেহেদী হাসান মিরাজ পর পর উইকেট ফেলে ঠিকই নিয়ন্ত্রণ রেখেছেন বাংলাদেশের কাছে। চট্টগ্রাম টেস্টের বাংলাদেশের বড় জয়ের সম্ভাবনার সঙ্গে মিরাজের সামনেও হাতছানি দিচ্ছে দুটি দারুণ রেকর্ড।

গতকাল চতুর্থ দিন শেষে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের জেতার সব পরিস্থিতিই তৈরি। ৩৯৫ রান তাড়ায় নেমে ৩ উইকেটে ১১০ রান তুলেছে উইন্ডিজ। ম্যাচ জিততে করতে হবে আরো ২৮৫ রান। ম্যাচ বাঁচাতে হলে বাকি ৭ উইকেট নিয়ে খেলতে হবে তিন সেশন। শেষ দিনের উইকেটে এই দুই সম্ভাবনাই খুবই ক্ষীণ। সফরকারীদের হয়ে ১৫ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন এনক্রুমা বোনার, ৩৭ রানে ব্যাট করছেন কাইল মায়ার্স। বাংলাদেশের সব উইকেটই তুলেছেন মিরাজ।

এই টেস্টে প্রথম ইনিংসে আট নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে উইকেট নিয়েছিলেন চারটি। দ্বিতীয় ইনিংসে এর মধ্যেই হয়ে গেছে ৩ উইকেট। ম্যাচে ১০ উইকেট পেতে আর তার দরকার ১০ উইকেট। একই টেস্টে সেঞ্চুরি আর ১০ উইকেটের ঘটনা টেস্টে করেছেন আর তিনজন। ইমরান খান, ইয়ান বোথাম আর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে সেই তালিকায় নাম উঠার সুযোগ মিরাজেরও। কেবল তা-ই নয়। ম্যাচে ১০ উইকেট নিতে পারলে দ্রুততম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ১০০ উইকেটও হয়ে যাবে তার।

বিশাল লক্ষ্য, উপমহাদেশের চিরায়ত চতুর্থ দিনের শেষ বিকেল। স্পিনাররা টার্ন পাবেন, বল আচমকা নিচু হবে। এমন অবস্থায় রান তাড়ায় নামা উইন্ডিজ প্রথম ১৬ ওভারে যেকোনো উইকেট হারাল না এটাই বরং কিছুটা ভিন্ন রকম। তবে উইকেট পড়া শুরু হতেই একের পর এক বিপর্যয়। সুইপ খেলে স্পিন সামলাবেন বলে তরিকা নিয়ে নেমেছিলেন ওপেনার জন ক্যাম্পবেল। তেমন ধরনে একাধিক বাউন্ডারিও পেলেন। তবে এই চেষ্টাই কাল হলো তার। মেহেদী হাসান মিরাজের সুইপ করতে গিয়ে পেছনের পায়ে লাগল। রিভিউ নিয়েই এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেননি।

১৭তম ওভারের প্রথম বলে ৩৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় উইন্ডিজ। আর দুই ওভার পরই দ্বিতীয় উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৭৬ রানের ইনিংস খেলা উইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট দ্বিতীয় ইনিংসেও দেখাচ্ছিলেন দৃঢ়তা। তাকেও ফেরান মিরাজ। তবে এই উইকেটে বড় অবদান বদলি ফিল্ডার ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বির। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে বা দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্ষিপ্রতায় নিচু ক্যাচ হাতে জমান তিনি। এবার ২০ রানেই থামতে হয় ব্র্যাথওয়েটকে। অভিষিক্ত শেন মোসলি এই ইনিংসেও ব্যর্থ। মিরাজের আচমকা নিচু হওয়া বল ব্যাকফুটে গিয়ে ঠেকাতে গিয়েছিলেন। উঁচু ব্যাকলিফট নিচে নামাতে নামাতে বল এসে লাগে পায়ে। পরিষ্কার এলডব্লিউ হয়ে ফেরেন ১২ রান করে।

এরপরই একটা প্রতিরোধ গড়ে উঠে ক্যারিবিয়ানদের। চতুর্থ উইকেটে বোনার-মায়ার্স মিলে তুলেছেন ৫১ রান। এতে কিছুটা দায় আছে নাঈম হাসানেরও। সহায়ক পরিবেশ পেয়ে তিনি ছিলেন বেশ আলগা। একদিকে মিরাজ যে চাপ তৈরি করছিলেন তার পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছিল না। ৪০ ওভারের মধ্যে মিরাজ একাই করেন ১৬ ওভার। তাইজুল অবশ্য রান আটকে রাখার কাজটা করেছেন ভালোভাবে। তবে উইকেট নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেননি।

এর আগে বাংলাদেশকে রাঙান মুমিনুল হক আর লিটন দাশ। টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি করার দিনে টেস্ট ৩ হাজার রানও তুলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দলের লিড বড় করতে লিটন খেলেন ৬৯ রানের ইনিংস। আগের দিনের ৩ উইকেটে ৪৭ রান নিয়ে নেমে বাংলাদেশ চা-বিরতির আগে ৮ উইকেটে ২২৩ রান তুলে ইনিংস ছেড়ে দেয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ৪৩০ (প্রথম ইনিংস)
বাংলাদেশ : ২২৩/৮ (ডিক্লে) (দ্বিতীয় ইনিংস)
সাদমান ৫, তামিম ০, শান্ত ০, মুমিনুল ১১৫, মুশফিক ১৮ , লিটন ৬৯, মিরাজ ৭, তাইজুল ৩, নাঈম ১* রোচ ০/১৭, রাহকিম ৩/৮১, গ্যব্রিয়েল ২/৩৭, ওয়ারিকান ৩/৫৭, বোনার ০/১৩, ব্র্যাথওয়েট ০/৭)
 
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২৫৯ (প্রথম ইনিংস)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১১০/৩ (দ্বিতীয় ইনিংস)
ব্র্যাথওয়েট ২০, ক্যাম্পবেল ২৩,
মোসলি ১২, বোনার ১৫*, মায়ার্স ৩৭* মুস্তাফিজ ০/১৪, তাইজুল ০/১২,
মিরাজ ৩/৫২ , নাঈম ০/২৯)
(চতুর্থ দিন শেষে)

Comments
Loading...