Prottashitoalo

সুখী দাম্পত্যের প্রতীক মান্দারিনের ঘরে নতুন অতিথী

0 31

বিশ্বে অন্যতম সুন্দর হলো হাঁস পাখি হলো মান্দারিন। এগুলো সাধারণত শীতের দেশেই দেখা যায়। চীন, জাপান, কোরিয়া, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়ায় ও উত্তর আফ্রিকার কিছু দেশে এদের মূল বিচরণক্ষেত্র। আর সেই পাখিই লালন-পালন করছেন পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী বেগম জীসান মীর্জা। এই পাখির ঘরেই এসেছে নতুন অতিথী। পাঁচটি ফুটফুটে বাচ্চা হয়েছে। ছোট্ট মান্দারিনও হেঁসে খেলে ভালো সময় কাটাচ্ছে।

মীর্জা। গত ৮ মে মান্দারিনের ঘরে নতুন অতিথি আসার পর ওদের এখন নিয়ে আসা হয়েছে মিন্টো রোডে বেগম জীসান মীর্জার বাসভবনে। আর ছোট্ট বাচ্চাদের মা-বাবা রয়েছে গাজীপুরে। সেখানেই গত দুই বছর ধরে ওদের বসবাস। মিন্টো রোডের বাসায় যত্নে যথাযথ পরিবেশে বেড়ে উঠছে ছোট ছোট সুন্দর হাঁসগুলো।

শীতকালে পরিযায়ী পাখি হিসেবে বাংলাদেশে খুব অল্প সংখ্যক মান্দারিনের আগমন ঘটে। এটি টোপরকাটা ডুবুরি বা সুন্দরী হাঁস হিসেবে পরিচিত। জাপানীরা এই হাঁসগুলোকে প্রেমিক পাখি বা সুখী বিবাহিত দাম্পত্য জীবনের প্রতীক বলে মনে করেন।

তবে স্ত্রীর তুলনায় পুরুষ হাঁস দেখতে বেশি সুদর্শন। পুরুষ মান্দারিন হাঁসের সারা শরীর জুড়ে নানান রঙের ছড়াছড়ি। প্রজনন মৌসুমে পুরুষ হাঁসের ডানা কমলা রঙ ধারণ করে। নৌকার পালের মতো দু’টি খাড়া পালক থাকে। মাথা গোল, মাথার চাঁদি বাদামি, চাঁদির সামনের দিকটা নীলচে সবুজ। স্ত্রী মান্দারিনের আবার এত রঙের বাহার নেই। ওরা দেখতে বেশ সাদামাটা। স্ত্রী হাঁসের পিঠ জলপাই-বাদামি, দেহতল সাদা। বগলের উপর সারি সারি সাদা ফুটফুটে দাগ। বুকে অনেকগুলো সাদা রেখা দেখা যায়। ডানার মাথার পালকগুলো নীল। এর উপর সাদা রছাপযুক্ত।

জীসান মীর্জা জানান, ছোটবেলা থেকে পশু-পাখির প্রতি ভালোবাসা ছিল তার। অনেকদিন ধরে নানা ধরনের পশু-পাখি লালন-পালন করছেন তিনি। দুই বছর আগে মান্দারিন সংগ্রহ করেন। এরপর ওদের গাজীপুরের ট্রেনিং স্কুলে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে সেখানে রাখা হয়। বাংলাদেশে মান্দারিনের বাচ্চা হয়েছে- এটা বিরল ঘটনা। এর আগে এটা শোনাও যায়নি। এখন ওদের বড় করে তোলাই চ্যালেঞ্জ।

আবাসস্থল হিসাবে এরা নদী এবং হ্রদের ঘন, গুল্মযুক্ত বনজ পরিবেশ পছন্দ করে। এই হাঁসের বেশিরভাগ আবাসস্থল নিচু অঞ্চলে দেখা যায়। শীতকালে এরা অতিরিক্ত জলাভূমি, প্লাবিত খেত এবং নদীতে চলে আসে। এরা সাধারণত রাতে পানিতে ও দিনের বেলায় মাটিতে থাকতে পছন্দ করে। এই হাঁস অনেক সময় গাছের গর্তে প্রাকৃতিক বাসা তৈরি করে; যা মাটি থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত উঁচুতে হতে পারে। এরা এক মাস ধরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রায় ১২টি সাদা রঙের ডিম পাড়ে। জমির ওপরে ছোটাছুটি বা হাঁটাচলা করে খেতে ভালোবাসে। এদের খাদ্য তালিকায় প্রধানত জলজ উদ্ভিদের কচিপাতা, বীজ, শামুক, পোকামাকড়, ছোট মাছ ও ব্যাঙ থাকে। মা হাঁস সাবধানে বাচ্চাদের সাঁতার কাটাতে শেখায়।

Comments
Loading...