Prottashitoalo

ইউক্রেনের আরো এক গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিল রাশিয়া

0 17

এত দিন ধরে শত্রুপক্ষকে সর্বশক্তি দিয়ে ঠেকিয়ে রেখেছিল ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। আজ স্রোতের মতো রুশ সেনা ঢুকে পড়ল পূর্ব ইউক্রেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিল্পশহর সেভেরোডনেৎস্কে। পিছু হটতে বাধ্য করল কিয়েভের যোদ্ধাদের।

ঠিক যেন মারিয়ুপোলের পুনরাবৃত্তি। অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক ভাবে সেভেরোডনেৎস্কও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ইউক্রেন নয়, গোটা ইউরোপের মধ্যে শিল্পাঞ্চল হিসেবে বিখ্যাত। মারিয়ুপোলের মতো এ শহরও গুঁড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। চারদিকে শুধুই ধ্বংসের ছবি। একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হানা চালিয়ে যাচ্ছে মস্কো। তাদের স্থলবাহিনীর হাতেও সুবিশাল অস্ত্রভান্ডার মজুত রয়েছে। উল্টো দিকে ইউক্রেনের ভাঁড়ার ফাঁকা। গত এক সপ্তাহ ধরেই তারা অস্ত্র-সাহায্য চেয়ে আসছে বিশ্বের কাছে।

রুশ বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে যোগ দিয়েছে ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলিও। তারা আজ জানিয়েছে, ইউক্রেনের বাহিনীকে শহর কেন্দ্রস্থল থেকে পিছু হটতে বাধ্য করে শেষে কোণঠাসা করা হয়েছে। মাঝে একটি সংযোগরক্ষাকারী সেতু ছিল, সেটিকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে আটকে পড়া সেনাদের আর কোনো যাওয়ার পথ নেই। ঠিক যেমন মারিয়ুপোলের আজভস্টল কারখানায় হয়েছিল। রুশ সংবাদ সংস্থা আরআইএ জানাচ্ছে, ‘ওদের কাছে দু’টো পথ রয়েছে। হয় সহযোদ্ধাদের দেখাদেখি সবাই আত্মসমর্পণ করুক। না হয়, প্রাণ দিক’।

আরো পড়ুন: আবারো করোনায় আক্রান্ত জাস্টিন ট্রুডো

আঞ্চলিক গভর্নর সের্গেই গাদাই বলেন, ‘পালানোর রাস্তা হিসেবে আর একটা সেতু রয়েছে। সিভেরস্কি ডোনেৎস নদীর উপরে ওই সেতু এখনো দাঁড়িয়ে থাকলেও তার অবস্থা খারাপ। রুশ হামলায় ভগ্নপ্রায়। তার উপর দিয়ে সেনার ট্রাক যাওয়া অসম্ভব’। গোটা শহরটা প্রায় জ্বলছে। প্রতিটি বাড়ি যেন যুদ্ধ করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সের্গেই লিখেছেন, ‘এমন ভয়ানক যুদ্ধ চলছে যে কোনো এলাকা দখলের লড়াই নয়, এক-একটা বহুতল শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রাণপাত করতে হচ্ছে’।

এ শহরের আজোত রাসায়নিক কারখানায় আশ্রয় নিয়েছেন কয়েকশো সাধারণ বাসিন্দা। সেখানেও গোলাবর্ষণ শুরু করেছে রুশ বাহিনী। মারিয়ুপোল পতনের সময়ে ঠিক এমনই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। আজভস্টল কারখানায় আটকে ছিল অসংখ্য সাধারণ মানুষ, ইউক্রেনীয় সেনা। সরকার জানিয়েছে, যুদ্ধের পরে যা হয়, খাদ্যাভাব ও রোগ সংক্রমণ, তাই এবারে দেখা দিচ্ছে ইউক্রেনে। মারিয়ুপোলে এখনো অসংখ্য বাড়ির ভগ্নস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছে মৃতদেহ। তা থেকেই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এ শহরে এখনো যারা রয়েছেন, তাদের মধ্যে কলেরার প্রকোপ দেখা দিয়েছে।

সেভেরোডনেৎস্ক শহরও হয়তো সে দিকেই এগোচ্ছে। হতাহতের কোনো হিসাব নেই। শহরের ৭০ শতাংশ রুশদের দখলে চলে গিয়েছে। মস্কোর বাহিনী এক-একটা বসতি অঞ্চল ধরে মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, ‘ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে- শহরের প্রতি মিটার এখন যুদ্ধক্ষেত্র’। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Comments
Loading...